বুধবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০০৭

মৃত মাছের গন্ধমাখানো দিনে

:: না, এই পোস্টে কোন জটিলতা নাই। সহজ কথায় লিখে রাখতে ইচ্ছে করছে একটা দিনের সবকিছু, আগে যেরকম লিখতাম। ::

মন খারাপ ভীষণ, শারীরিক অবস্থাও সেরকম। ঘুম থেকে উঠেছি অনেক সকালে, মেঘেদের আঁধার আর বৃষ্টিতে মাখামাখি আকাশ ও মাটি, তার মাঝেই বের হই বাসা থেকে।

১০টা থেকে পার্টটাইম ছিলো। সময় মেকআপ দিতে গিয়ে সাইকেল নিয়ে ভার্সিটির পাশের রেল স্টেশন পর্যন্ত গিয়ে ট্রেন ধরি, ট্রেনের বৃষ্টি-ঘোলাটে কাঁচে নিজের চেহারা দেখে নিজেই চমকে উঠি। এ আমি নই - মনে হতে থাকে। ভিজে ভিজে হাজির হই পার্টটাইমে - ওরাকল ডেভেলপমেন্ট সার্ভার তৈরি করে দিতে হবে - সেই কাজ - কনটেন্টস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের সেটআপ বাগে আনতে পারি না - এই করেই চারটে বেজে যায়।

ল্যাবে ফিরি, ল্যাব নেটওয়ার্ক এর ম্যানেজমেন্ট নিয়ে দেখি দুজন পিএইচডি ক্যান্ডিডেট নিজেদের মাঝে তুমুল তর্কে ব্যস্ত। মেজাজ অনেকদিন পর খারাপ হয়, আর যাইহোক - এরকম একটা দিনে এই দুইজনের গুঁতোগুঁতিতে দুইটারেই চড় লাগাইতে ইচ্ছা করে। পারি না। বাধ্য জুনিয়রের মতো চুপ করে শুনে যাই। এইসব নীতিনির্ধারকরা ঝগড়া করে, করুক - আমার কাজকর্ম না বাড়লেই হয়।

নিজের পড়াশোনা করার জন্যে ডেস্কে এসে থিতু হওয়ার চেষ্টা করি। হয় না, কিছুতেই কিছু হয় না।
ডেস্কে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি, জাগি, খিদে মেটানোর জন্যে কিছু খাবার-দাবার কিনে আনি। মুকেশ এর পুরনো গান শুনে অনুভূতিগুলো ধুয়ে ফেলার চেষ্টা দেই। ডম ডম ডিগা ডিগা মৌসুম ভিগা ভিগা.. বৃষ্টিতে ভিজে রাজকাপুরের অসাধারণ অভিনয়। তারপরো হয় না, কিছুতেই কিছু হয় না। স্থবির পৃথিবী আর সচল হয় না।

বাসায় ফিরতে ইচ্ছা করে। বাইরে ঠান্ডা। দেশে ফোন করা দরকার, কিন্তু করতে ইচ্ছে করছে না। কাল নাকি আবার রোজা শুরু, মাথা থেকে আপাতত সেই ব্যাপারটা দূরে রাখি।
শিনজো আবে হঠাৎ পদত্যাগ করেছেন। অবাক হই। টিভিতে সেই খবরে ভর্তি। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, রুপোর চামচ মুখে নিয়ে বেড়ে ওঠা জাপানী প্রধানমন্ত্রী, স্ট্রেস সহ্য করতে পারেননি দায়িত্বের। কেউ সুখে নেই!

এইভাবে একটা দিন শেষ হয়, সারাটা দিনের সঙ্গী হয়ে থাকে মরা মাছের আঁশটে গন্ধ মাখানো অনুভূতিরা। মনে হতে থাকে, এই আমি আমি নই।

----
ডম ডম ডিগা ডিগা"
গান: মুকেশ
"চালিয়া" ছবিতে গাওয়া গান। ইউটিউব থেকে গানটা ক্যাপচার করা।
রাজকাপুরের অসাধারণ অভিনয়ের ভিডিও এখানে , ইউটিউব লিংক

কোন মন্তব্য নেই: