বুধবার, আগস্ট ২৯, ২০০৭

পোড়া সময়ের অক্ষরমালা

ছোটবেলায় গোল ডায়াল ঘুরিয়ে করতাম যে ফোন, তা এখন হয়ে গেছে ব্যক্তি পরিচয়ের অংশ। না থাকলেই নয় একটা নম্বর - কারো আবার দুটো, তিনটে। দেশে ফেলে আসা বন্ধুদের একেকজনের নম্বরের কালেকশন।
সেই যে ইয়াহু দিয়ে শুরু করেছিলাম প্রথম একটা মেইল অ্যাড্রেস খোলা, তা এসে স্থায়ীভাবে ঠেকেছে গুগল মেইলে মানে জিমেইলে - আছে নিজস্ব ডোমেইনও একটা।

বাংলায় দুটো লাইন লিখে কোন এক পুরনো শুভাকাঙ্খীকে পড়তে বলে কয়েকবার ঝাড়ি খেতে হয়েছিল এনকোডিং আর ডিকোডিং সমস্যা নিয়ে।
আর এখন অভ্যস্ত আঙুলে ভালবাসা বুনে চলি বাংলা অক্ষরে।

ডিজিটাল হয়ে গেছে ভালবাসা, বন্ধুত্ব, আর আমাদের মনন।
মুখোশ পড়ে দিন-তারিখ ধরেবেঁধে এখন আমরা বন্ধুস্মরণ দিবসে বলে উঠি, বন্ধু, কেমন আছিস , কিংবা বাবাদিবসে, আয়্যাম মিসিং য়্যু, ড্যাড!
আমরা বদলে গেছি আমাদের পৃথিবীসহ। বেনিয়া আর কর্পোরেট, টেলি কম্যুনিকেশন সার্ভিস প্রোভাইডারদের তৈরি করা চাকুরির বাজারে আমরা আমাদের স্মার্টনেসের বিনিময়ে ক্যারিয়ার কিনি। কিনি ভবিষ্যত। বিকিয়ে দেই ঘাসফুল আর নদীর জন্যে আমাদের ভালবাসা।


কিন্তু, আমি অবশেষে বদলেছি কি? কৈশোরের আমি বঙ্কিম বা রবীন্দ্রনাথ নিয়ে খাটের নীচে, লুকিয়ে ফেলা নিজেকে অপ্রিয় সব বাস্তব কষ্ট থেকে। খরগোশের মতোন।

আজ, বয়েস যখন দুই যুগ পেরিয়ে গেছে? এই অসময়ে, যখন লুকোতে পারিনা।


কৈশোরের দিনলিপির পাতায় যে নিঃসঙ্গ আত্মকথন, প্লাজমা, এলসিডি অথবা সিআরটি টিউবের স্ক্রীনে দেখানো যুক্ত ও অযুক্ত অক্ষরমালার এই জায়গাটুকুতেও পাল্টায়নি লেখার সে ধরন। অন্ধকার পৃথিবী থেকে বেরিয়ে আসা হয় নি আমার।
আমি অচল ও সেকেলে মানুষ অচলই থেকে গেছি।

কৈশোরে বুনে রাখা আত্মধ্বংসের বীজ ডানা মেলে হয়ে গেছে বটগাছ-সম। সময় বদলেছে, বদলে গেছে সবকিছু।
কিন্তু এখনো একেকটা দিন মানে কষ্টের খাতায় আরেকটা পাতা। জীবন মানে, পুড়ে যাওয়া মন আর কষ্ট চাপা দিয়ে দাঁত বের করে সব কিছু এনজয় করছি ভাব এনে বুদ্ধিদীপ্ত হাসি মুখে ধরে রাখা। জীবনের মানে, অচল মানুষের চামড়ার উপরে নেকটাই-স্যুটের মুখোশ জড়িয়ে নিজেকে পণ্য হিসেবে তুলে ধরা কর্পোরেট চাকুরির বাজারে।

জীবন মানে সংসারী মানুষ হওয়ার বাসনা নিয়ে নানান সমঝোতা করে চলা প্রতি মুহূর্ত, সারাজীবন সমাজবদলের গান গেয়ে সবশেষে বেনিয়া কোম্পানিতে কেরানি হওয়া, ঘরের ঝড় কোনওভাবে চাপা দিয়ে লোকের চোখে সুখী দম্পতির অভিনয় করে যাওয়া। অথবা পালিশ করা ব্লেজার বা স্যুট গায়ে পরবাসে বেড়াতে আসা নোবেল ইউনুসের সাথে ছবি তোলার জন্যে হুড়োহুড়ি?

জীবনের মানে কি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে রুটি, কলা, কর্ন ফ্লেক, বাচ্চার দুধ, ফার্মেসি থেকে নিরাপত্তা - কিনে বাড়ি ফেরা অথবা বিষ্যুতবারের রাতে বন্ধুদের সাথে কয়েক পেগ গিলে বাড়িতে ফিরে বউয়ের বকুনি। এই তাহলে জীবন?

সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি, যে কিনা সাতপাঁচ না ভেবে জীবনের বড্ড অসময়ে গত সপ্তায় নিজের ভালবাসার মানুষটির সাথে অনানুষ্ঠানিক সাতপাঁকের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে, তাকে আমি অভিনন্দনের মেইলে লিখি "আমি কোন স্বপ্ন দেখি না এখন আর। "
আত্মজনের কষ্ট, নিজের পোড়া পৃথিবী আর অস্মার্ট নিজেকে নিয়ে সভ্যভব্য সমাজে স্যুট-টাই পরে সভ্য প্রমাণ করে যাওয়ার যে অসফল চেষ্টা, সেইখানে অসময়ে পুড়ে যাওয়া মনকে চাপা দেয়া হয় না আমার।

আত্মধ্বংসের বটগাছটা ডাকতে থাকে মুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে।
প্রতিনিয়তই।
উপেক্ষা করতে পারবো না বোধহয় সে ডাক।


--
অন্ধকার ভরা হলেও এই পোস্টটি সেই বন্ধু ও তাঁর বালিকাকে উৎসর্গ।
কষ্টকর অনেকটা পথ বাকি এখনো তোদের দুজনের - জানি।
তোদের জীবন সুন্দর হোক রে, সুমি ও দীপ।
ছবি কৃতজ্ঞতা : ফ্লিকার লিংক

রবিবার, আগস্ট ২৬, ২০০৭

"শাসকের প্রতি" - জয় গোস্বামীর কবিতা

শাসকের প্রতি
জয় গোস্বামী

আপনি যা বলবেন
আমি ঠি-ক তাই করবো
তাই খাবো
তাই পরবো
তা-ই গায়ে মেখে ব্যাড়াতে যাবো
আমার জমি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো
কথাটি না বলে।
বললে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে থাকবো সারারাত
তাই থাকবো।

পরদিন যখন, বলবেন
"এবার নেমে এসো"
তখন কিন্তু লোক লাগবে আমাকে নামাতে
একা একা নামতে পারবো না।
ওটুকু পারিনি বলে
অপরাধ নেবেন না যেন।

----------------
ওপার বাংলায় নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর ২০০৬ ডিসেম্বরের পটভূমিতে প্রিয় কবি জয় গোস্বামী র লেখা।
কবির আবৃত্তি অডিও থেকে কপি করতে কোথাও ভুল হতে পারে।
এপারের সামরিক মাথামোটা শাসকদের জন্যেও এই মেসেজটুকু জরুরি বলে মনে করছি।
তাই তুলে রাখলাম এইখানে।

শনিবার, আগস্ট ২৫, ২০০৭

এ আমার দেশ নয়

বিবিসি বাংলা শুনছি এই মুহূর্তে, শনিবারের সকাল। বিবিসি ছাড়া গতি নেই।
মধ্যরাতে কলিংবেল, সম্মানিত বিদ্যাগুরুগণ যান মূর্খদের সাথে - মূর্খ সেনাদের সাথে।
সাইদুর রহমান খান, মলয় কুমার ভৌমিকদেরও মধ্যরাতে যেতে হয় প্রশ্নের উত্তর দিতে। আমি অসহায়বোধ করি।

গত কয়েকদিনে সাংবাদিকদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিডিনিউজ এর বিপ্লব রহমান লিখছেন সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা। পড়ে কেঁদে ফেললাম। বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করেনা এইসব।
এ আমার দেশ নয়। এই সেনারা আমার ভাই নয়।

একটু পিছনে ফিরি।
ব্লগার ও সাংবাদিক তাসনিম খলিল গত কয়েক মাস আগে ২৪ ঘন্টা কাটিয়ে এসেছেন যৌথ বাহিনীর আতিথেয়তায়, তিনি বলছেন, যৌথ বাহিনী এখন টেকি - তাদেরকে আপনার জিমেইল আইডি-পাসওয়ার্ড দিতে হবে, তারা ইনবক্সে-আউটবক্সে অ্যাকসেস করবেন, সেলফোনে ইনকামিং-আউটগোয়িং নম্বরের লিস্টি দেখবেন।
আপনি ভার্চুয়ালি কার বা কাদের সাথে উঠেন-বসেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র (!) করেন - তারা সেইসব তথ্য চাইবেন। এমনটাই বলছেন নিজস্ব চেষ্টায় দেশ থেকে পালিয়ে বাঁচা তাসনিম খলিল। তাঁর সহধর্মিণী এক মাস আগে তাসনিমের সাথে মেইল যোগাযোগ ছিল এমন মানুষদের এভাবেই সতর্ক করে দিয়েছেন এক গ্রুপমেইলের মাধ্যমে।

সকালের প্রথম আলো 'র অনলাইন ভার্সন, ছুটির দিনে প্রাণচঞ্চল বিভাগীয় শহর। খবরের আশাবাদী ভাষা আমার মুখে মতি ও আনামের এই জলপাই-পৃষ্ঠপোষকতার জন্যে একদলা থুথু এনে দেয়। সংগ্রাম এর মতো অশ্লীল পত্রিকার সাথে এইসব চাটুকারদের কোন পার্থক্য এখন এই মুহূর্তে নেই।

সোমবার থেকে শুক্রবার - নিজস্ব ব্যক্তিগত কারণে খুব সামান্য সুযোগ পেয়েছি দেশের খবর নেবার।
প্রায় অন্ধকারে আছি - কী হচ্ছে স্বভূমিতে? আমরা পাকিস্তানের মতো কোন ব্যর্থ রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে এগুচ্ছি? কী সেই মোটিভেশন সেনা-শাসকদের এইসব সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে?
নিম্নবিত্ত দিনে-আনে দিনে-খায় মানুষ কোথথেকে নিজের স্বজন ও পরিবারের মুখে খাবার দেবে এইসব জরুরি ব্যবস্থায়?

গত কয়েকদিনে আত্মজনের খবরও নেয়া হয়নি - তারাই বা কেমন আছে - কে জানে!
আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ - আত্মজনেরা ভালো থাকলেই আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।

রবিবার, আগস্ট ১২, ২০০৭

বৃষ্টি ও মেঘহীন শূন্যতার প্রলাপ

এইরকম মাঝেমাঝেই এসে পড়ি এই নদীর পারে। এইরকম মানে, যখন নিজের সাথে নিজেই পেরে উঠি না।
কান থেকে গান খুলে রাখি পকেটে।
আইপড এর সবচেয়ে ছোট বাচ্চা ভার্সনটা - ন্যানো নয়, ন্যানোরও বাচ্চা শাফল্
হাতে যথেষ্ট টাকা ছিলো না এরকম সময়ে কিনেছিলাম। এখন আর ইচ্ছেটা নেই ন্যানো কিংবা মা আইপডকে কেনার, তাই কেনা হয় না। ক্ষুদে বাচ্চা টাই পকেটে পুরে আর কানে যোগ করে চলি।
পিছনে লিখে নিয়েছিলাম প্রিয় রবীন্দ্র সংগীত এর লাইন - তোমায় নতুন করে পাবো বলে

আজকাল শুনি হ্যায়লি ওয়েস্টেনরা (») আর জোয়ান বায়েজ
মাঝেমধ্যে নচিকেতা।

সঞ্চয়ে ছিল সেই ফেলে আসা
ভাবনার জোছনায় ঘোর অমানিশা।
সঞ্চয়ে ছিল সেই ছেলেবেলা, মনে নীল রঙের নেশা কোন ঘন মেঘের ভেলা।
...
সঞ্চয়ে ছিলো কতো অভিমান, হারিয়ে যাওয়া গান, পুরনো সম্মান।
এসময় - অসময়, ফুরালো সঞ্চয়।


কিংবা
...
হাজার মানুষের ভীড়ে মিশে ......
ভোরের কোলাহল ঘুমের শেষে, দুচোখ আজো খুঁজে ফেরে
ফেলে আসা ছেলেবেলা।


মানুষের ভীড়ে থেকেও মানুষ খুঁজে ফেরা। একা একা পথ চলা, সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে - মালয় সাগরে।
আশার নিঃস্বতায় স্মৃতিজাগানিয়া শৈশব এসে নিয়ে যায় মেঘভ্রমণে।

সন্ধ্যা নয়, অলস ও মন খারাপ করা বিকেল - সপ্তাহশেষের ছুটির দিনের। সারাদিনে গরম অনেক, পারদ উঠে গেছে ৩৫ এর উপরে, সেলসিয়াস স্কেলে। আমার এই স্কেল ব্যাপারটা বড়ই গোলমেলে ঠেকে মাঝেমধ্যে, জ্বর হলে একরকম আর গরম মাপায় আরেকরকম। অনেকদিন জ্বর-জারি হয় না অবশ্য।

নদীর ধারের বেসবল খেলার জায়গাটায় গরমের ছুটিতে প্র্যাকটিস সেশন হাইস্কুল কিশোরদের, ছুটিশেষের জাতীয় ইভেন্টের প্রস্তুতি বোধহয়। কতো স্বপ্ন - ঈর্ষা হয়!
চোখ বন্ধ করে হেঁটে চলা জীবনে স্বপ্ন না থাকার ঈর্ষা।
কিশোরী ও বাবা - দুজনে দুটো দ্বিচক্রযানে, গল্প করতে করতে চলে যাওয়া পাশ কাটিয়ে।
আমিও একটা চক্রযানে। হালকা গতি, নিঃশব্দ চলা। দূরে, প্রিয় পোষা প্রাণীদের নিয়ে ফ্রিজবি খেলায় কোন দম্পতি। অথবা, বারবিকিউতে একটা দল - পোড়া গন্ধ ও ধোঁয়া। বিয়ারের ক্যান ছড়ানো এদিক ওদিক।

এইসব বিচ্ছিরি বাস্তবতার মাঝেও পোড়ে মন।
স্মৃতিদের মুছে ফেলা যেত যদি কোনওভাবে - অনেক দিন ভেবেছি।
আজও ভাবি আর কষ্ট পাই।
সেই কষ্টে তাই কিছু লেখা হয় না, লিখতে পারি না এখন আর।
এখন শুধু দৌড়ুই, দৌড়ুতে থাকি এই মরা নদীটার ধার ঘেঁষে, টেনে ধরতে না পারা মনকে কোথাও থিতু হওয়ার সুযোগ দেই না, সুযোগ দিলেই সে পুরনো রং এর ঝাঁপি খুলে বর্তমানের পটে বৃষ্টি আর মেঘ আঁকতে বসবে।

তাই, দৌড়ুতেই থাকি সময়ের কাছে হেরে যাবার আগে।


লেখা: আগস্ট ১২, ২০০৭
সচলায়তনেও প্রকাশিত
---
ছবি : নিজস্ব, আগস্ট ১২, ০৭ এ তোলা
সময়-অসময় : নচিকেতার গান

রবিবার, আগস্ট ০৫, ২০০৭

"পরাণো কান্দে তোরো লাগিয়া"

বুড়ো হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন।
একেকটা মুখ এসে স্মৃতির দরজায় টোকা মারে।

উপমা নামের মেয়েটা আমার সাথে পড়তো, সেই ছোটবেলায়, ক্লাস ওয়ান-টু, নামটা মাথায় ঢুকে পড়ে আছে। আমি ফার্স্ট হবো, না সে - এরকম একটা প্রতিযোগিতা ছিলো বোধহয়।
কিংবা জিমি, যার সাথে একবার চিনিকলের গাড়ির পেছনে ঝুলে পড়ে আখ চুরি করে খেয়েছিলাম। হাফপ্যান্ট বয়েসের কথা, অজ-মফস্বল শহর পট হয়ে আছে যে ছবিতে। করতোয়া নদী চিরে গেছে যার বুক।
আমার জনকের ছিলো ব্যাংকের চাকুরি, ঘুরপাক খেতাম উত্তরের মফস্বলে।

উপমার বাবার প্রশাসনে বদলির চাকুরি ছিলো, তারপর উপমাকে খুঁজেছিলাম বড় হয়েও, যদি কোথাও দেখা হয়ে যায়, আরে! তুই সেই পিচ্চিটা নাহ? টাইপের আবিষ্কারের আশায়।

যেমনটা দেখা হয়ে গিয়েছিলো ফয়সলের সাথে, ক্লাস থ্রিতে ছেড়ে আসা কিন্ডারগার্টেনের ফয়সল - দেখা হলো আহসানউল্লাহর সামনে হঠাৎ একদিন, যন্ত্রপাতির ভার্সিটিটায় ভর্তি হতে এসে। মাঝে অবশ্য ১০-১১ বছর। আরে, তুই তো সাইজে বাড়িসনি - চিৎকার্ করে ওঠা, নতুন ধরনের দেখা হয়ে যাওয়া।
কিংবা অনির্বাণ, সেই বিশালদেহী বন্ধুটা, যার নিষিদ্ধ জ্ঞানভাণ্ডার ছিলো আমাদের কিশোর বয়সের বিস্ময়, ক্লাস সিক্সে চলে গেলো ইন্ডিয়ায় - ইঁচড়েপাকা, আমাদের সাথে পড়ার জন্যে একটু বেশি বয়েস ছিলোই বোধহয়। অনির্বাণ, আবার যদি দেখা হতো তোর সাথে রে!
অথবা ইমন, কতোদিন পরে তোকে খুঁজে পেলাম, চলে গেছিস সুইডেনে, পৃথিবীর অন্ধকার অংশে থাকিস - ২ ঘন্টা সূর্যের আলোর দিনও পার করিস নাকি- একদিন বলেছিলি। গুগল টকে তোকে দেখি মাঝেমধ্যে - নক করার সাহস হয় না কেন যেনো!

স্বপনটার সাথে তো আর দেখাই হলো না। ওর সাইকেলের ক্যারিয়ারটা বরাদ্দ ছিলো আমার জন্যে। দূরত্ব বাড়ার শুরু কলেজ থেকেই - তারপর ছিটকে পড়া।

সব মুখ একসাথে ঘুরপাক খায় এই রজত জয়ন্তী পার করে আসা জীবনটায়। সব প্রতারক আর ভন্ড।
এই লগ্নে হারানো সূচি, যে ছেড়ে যায় এই কাটখোট্টা জীবনের দুঃস্বপ্নদের মাঝে আমাকে একা ফেলে রেখে, সবকিছু পায়ের নিচে ফেলে। স্বার্থপর!

কেউ কথা দিয়ে কথা রাখেনা।
কেউ নাহ। আমার অভিমানের আকাশটা বড় হতেই থাকে। আবার দেখা হবে - কথাটাও মিথ্যে। দেখা হয় না কারো সাথে।
আমি অপার হয়ে বসে থাকি তোদের জন্যে। ইচ্ছে হয়, চিৎকার করে বলি - তোরা কেউ কথা রাখিস নি।

রিনরিন বেজে যায় কান্না আমার ছিঁচকাঁদুনে হৃদয়ের কোণে।
"বন্ধুয়ারে, পরাণ যে কান্দে তোরো লাগিয়া!"
আবার যদি দেখা হতো তোদের সাথে রে।

-----
রোববার, আগস্ট ৫, ২০০৭

শনিবার, আগস্ট ০৪, ২০০৭

কষ্ট মুছে ফেলা কণ্ঠ - "Hayley Westenra"

কদিন আগে বিক্ষিপ্ত মনে য়্যুটিউব ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে ভালো লেগে গেলো হ্যায়লি ওয়েস্টেনরা । সেই থেকে শুনছি আর মুগ্ধ হয়ে আছি।
এক কথায় ডুবে আছি নিউজিল্যান্ডার এই সুকন্ঠী সপরানো র সুরে।
অভিমান আর কষ্ট মুছে ফেলা সুর আর কথা।
এই পোস্ট ছেড়ে যাবার আগে শুনে নিন তাঁর প্রথম অ্যালবাম থেকে নেয়া এই গানটি - "Beat of your heart".
এই গানের লিরিক পেতে এখানে ক্লিক করুন অথবা নিচের "পুরো পোস্ট পড়ুন" লিংকে গুঁতো দিন। হ্যায়লে ওয়েস্টেনরা র গানের লিংক : য়্যুটিউব অথবা ইস্নিপস
"Beat of your heart" - Hayley Westenra



এই গানের লিরিক ।