
চমকে উঠেছিলাম সে রাতে, সেই বোধটা মস্তিষ্কের কোন নিউরনসমষ্টি এখনো ধরে রেখেছে তাদের বুকে। কেনো; জানা নেই । জানতে ইচ্ছে করে এইসব জীবনরহস্য কখনো-সখনো অবশ্য।
পলাশী আর বকশীবাজার এর মাঝে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি আছে সেটিতে পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো ছয় মাস, সেই সূত্রে হল যাপন করেছিলাম আটমাস মতোন।
আহসানউল্লাহ পশ্চিম ২৩৪।
থাকতাম একা একটা রুমে - তিনজনের রুমে একা - ছাত্রফ্রন্ট এর তারেক ভাই থাকতেন নিজের বাসায় আর অন্য একটা সিট কেমন যেন অবরাদ্দ গোছের। সেই রুমটায় আমি আসার বছর সাতেক আগে কে একজন বেছে নিয়েছিলো আত্মহনন - সেই মানুষটার ছেড়ে যাওয়া একটা ঘড়িও টিকটিক করতো অনেকদিন। তারেক ভাই মজা করে বলতেন, ব্যাটারি নাকি উনি কখনো বদলাননি , অশরীরী শক্তি দিয়ে চলে ঘড়িটা।
মাঝরাত্তিরে জেগে উঠতাম, বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কালো চাদর টা গাঁয়ে জড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করতাম অনেকক্ষণ । ভয় পাইনি কখনো - অশরীরী অথবা শরীরী কোন কিছুর।
দেশ ছাড়ার পর এক বছর অনেকগুলো ভিন্নসংস্কৃতির মানুষের সাথে থাকতাম, মাঝরাত্তিরে উঠলে মাতালদের মজার সব কান্ড দেখতে হতো। নিজে ওই পানীয়-সম্পর্কিত বেড়াটা ভাঙতে পারিনি কখনো, তাই মজা দেখতাম।
এখনো মাঝরাত্তিরে ঘুম ভেঙে যায়, পেপারওয়ালা ছোকরাটা তার মোটরবাইক হাকিয়ে যখন গলি ছেড়ে যায় - বাইকের লাইসেন্স থাকলে আমিও যে পার্টটাইম টা করবো, অনেকদিন ভেবেছিলাম। গা ঘেমে ওঠে, আর ঘুমুতে পারিনা ।
এক সুহৃদ কিছুদিন আগে পর্যন্ত ইনসোমনিয়ায় ভুগতো - তাকে যে পরামর্শগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো নিজেই চেষ্টা করে দেখি।
কাজ হয়না অবশ্য।
রাগ হয় নিজের উপর।
দ্বিচক্রযান নিয়ে বেরিয়ে পড়ি মাঝরাতে।
ওই গানটা সুর ধরি, যেটা মাঝেমধ্যেই মনে আসে - হরি, দিনতো গেলো, সন্ধ্যে হলো, পার করো আমারে।
------
ছবি ব্যবহার, ক্রিয়েটিভ কমন্স এর আওতায় ফ্লিকার থেকে, কৃতজ্ঞতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন