আমি বৃষ্টি পছন্দ করি না।
বৃষ্টিদের আমি পছন্দ করি না। ঝুমঝুম বাচ্চা বৃষ্টি, নরম ঝরঝর ঝরে যাওয়া মা বৃষ্টি আর কটকটে বাজ পড়তে থাকা বাবা বৃষ্টি।
তারা আমাকে আমার শৈশবের পুরনো শহরের কথা মনে করিয়ে দেয়। ধোঁয়াটে সকালে ছাতা এক হাতে নিয়ে ফোনিক্স বা ফিনিক্স সাইকেলে চড়ে ছুটে যাওয়া বালকটির কথা মনে করিয়ে দেয়।
ভিজে যাওয়া স্কুলের য়্যুনিফর্মের ফতুয়া, নষ্ট যাওয়ার ভয়ে হাতে নেয়া বাটার কালো জুতো আর কাদা মাখানো খাকি প্যান্ট - সব মনে করিয়ে দেয়। বাড়িতে ফিরে সেই ফতুয়াটা ধুয়ে আবার শুকোতে দিতে হবে পরের দিনের জন্যে- জেনেও কোন ভাবান্তর হয় না সেই বালকটির। ভাবার মতো বয়স নয় যে সেটা।
কসাইরা ঝিম মেরে থাকে, বিক্রি ভালো হয় না; বেওয়ারিশ আহত কুকুরগুলোরও মন খারাপ, আজ কিছু মিলবেনা বোধহয়। আমি কাদা মেখে বাড়ি ফিরি তার পাশ দিয়ে। পচা লাউ, পোকায় খাওয়া আলু এদিক ওদিক ছিটিয়ে পড়ে থাকে কাঁচাবাজারটায়।
বাড়িতে ফিরি, বাড়িতে ফিরলে আমার মন আরো খারাপ হয়। তাই আজও বর্ষায় আমার মন খারাপের ভয় করে।
আমি আজও এক হাতে একটা সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরি, অ্যামেরিকান ঈগল স্পোর্টস বাইসাইকেল। শৈশবে যেরকম একটা বস্তু স্বপ্ন ছিলো অনেকটা সময়।
মাঝরাতে আরেক হাতে থাকে ছাতা। মাঝপথে এসে ছাতাটা গুটিয়ে ফেলি। ইচ্ছে করে ঠাণ্ডা বৃষ্টিকে আলিঙ্গন করে যাই আমি। আমার মনে হতে থাকে, আমি বৃষ্টি ভালবাসি । আমার বোধ হয়, বৃষ্টি একই সাথে প্রিয় ও অপ্রিয় আমার কাছে। সারাদিন আমার মন খারাপ থাকে নানানকারণে, তবুও। আমি আসলে ঠিক করতে পারিনা, বৃষ্টিকে আমার, পছন্দ না অপছন্দ কোন তালিকায় ফেলতে হবে।
আমি জানি, এইসব দ্বিমাত্রিক দ্বন্দ্বেরা আমাকে কুরে কুরে খাবে আমার বাকি সংক্ষিপ্ত জীবনটুকুও।
----------
ছবি কৃতজ্ঞতা : ফ্লিকার
সোমবার, জুলাই ৩০, ২০০৭
শনিবার, জুলাই ২৮, ২০০৭
ভোট চাই, দিতে হবে!
একখান ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। ডান পাশের সাইড বারে আছে।
এই জায়গায় যারা পদধূলি দেন, অনুগ্রহ পূর্বক একখান ভোট দিয়া যাবেন।
লবণ লবণ ধন্যবাদ আগেভাগে।
--
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি .... র লেখারু
এই জায়গায় যারা পদধূলি দেন, অনুগ্রহ পূর্বক একখান ভোট দিয়া যাবেন।
লবণ লবণ ধন্যবাদ আগেভাগে।
--
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি .... র লেখারু
শুক্রবার, জুলাই ২৭, ২০০৭
এইসব দিনরাত্রি - ৪
অতঃপর, অধম সিদ্ধান্ত নিলো, মানে মানে - নিতে বাধ্য হলো।
তত্তোদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, ঘর হয়ে গেছে মরা ইঁদুরের গন্ধময় আর দিনযাপন হয়ে গেছে অক্ষছেঁড়া নামের মরা পচা নদীর মতো। সেইখান থেকে ফেরত আসা যায় না, মানে মানে, কেউ ফেরত আসতে চাইলে সে নাকি মারা পড়ে আর তাকে নতুনভাবে ধারাপাত শিখতে হয়।
কিন্তু কেমন করে য্যানো অধম ধারাপাত না শিখেই মুক্তি পেলো, আর ভাবতে লাগলো, পিথীমিটা যা মজার নাহ! আর সে বিশ্বাস করতে লাগলো, ঈশ্বরই তাকে উদ্ধার করেছে। তাই তার জীবন হয়ে উঠলো ঈশ্বরময়!
নতুন জন্মের পর, মরা ইঁদুর টাকে খুঁজে খুঁজে বেড়াতে লাগলো সারাঘর জুড়ে।
অবশ্য, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সে সৌভাগ্য তার হয় নাই। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত মরা ইঁদুরের সাথে সহ-বাস?
তাই, মাথা ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে চুলকাতে চুলকাতে সে ঘর ছেড়ে বেড়াতে গ্যাছে পচা নদীর উৎসমুখ খুঁজতে। তবে, সে নাকি বিশ্বাস হারায়া ফেলছে জগতের মনু সম্প্রদায়ের উপর। এখন সে কী করবে, জানার জন্যে আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে এই গাঁজা সিরিজের পরবর্তী সিকুয়েল পর্যন্ত।
------------------
যথারীতি ডিসক্লেইমার:
"এইসব দিনরাত্রি" র ব্যাপারস্যাপার গুলো জাস্ট কিছু দৈনন্দিন খসড়া ,ইচ্ছে করেই দুর্বোধ্য করে তোলা।খুব একটা মনোযোগ দিয়ে না পড়ার অনুরোধ করি।
তত্তোদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, ঘর হয়ে গেছে মরা ইঁদুরের গন্ধময় আর দিনযাপন হয়ে গেছে অক্ষছেঁড়া নামের মরা পচা নদীর মতো। সেইখান থেকে ফেরত আসা যায় না, মানে মানে, কেউ ফেরত আসতে চাইলে সে নাকি মারা পড়ে আর তাকে নতুনভাবে ধারাপাত শিখতে হয়।
কিন্তু কেমন করে য্যানো অধম ধারাপাত না শিখেই মুক্তি পেলো, আর ভাবতে লাগলো, পিথীমিটা যা মজার নাহ! আর সে বিশ্বাস করতে লাগলো, ঈশ্বরই তাকে উদ্ধার করেছে। তাই তার জীবন হয়ে উঠলো ঈশ্বরময়!
নতুন জন্মের পর, মরা ইঁদুর টাকে খুঁজে খুঁজে বেড়াতে লাগলো সারাঘর জুড়ে।
অবশ্য, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সে সৌভাগ্য তার হয় নাই। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত মরা ইঁদুরের সাথে সহ-বাস?
তাই, মাথা ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে চুলকাতে চুলকাতে সে ঘর ছেড়ে বেড়াতে গ্যাছে পচা নদীর উৎসমুখ খুঁজতে। তবে, সে নাকি বিশ্বাস হারায়া ফেলছে জগতের মনু সম্প্রদায়ের উপর। এখন সে কী করবে, জানার জন্যে আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে এই গাঁজা সিরিজের পরবর্তী সিকুয়েল পর্যন্ত।
------------------
যথারীতি ডিসক্লেইমার:
"এইসব দিনরাত্রি" র ব্যাপারস্যাপার গুলো জাস্ট কিছু দৈনন্দিন খসড়া ,ইচ্ছে করেই দুর্বোধ্য করে তোলা।খুব একটা মনোযোগ দিয়ে না পড়ার অনুরোধ করি।
বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৬, ২০০৭
দ্বীপদেশের চিঠি-১: গণতন্ত্র
সতর্কতা : এটি একটি দীর্ঘ, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো ধরনের বক্তব্য সম্বলিত পোস্ট। সচলায়তন এবং আমার নিজস্ব জার্নালের জন্যে লেখা।
-------------
০.
জাপান।
১.
সরকারে কে এলো আর গেলো - এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারো এই দেশটায়। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে - এমন খবরে আগ্রহ নেই রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পর্কহীন কেউ ছাড়া, তরুণ বা বৃদ্ধ বয়েসী কারও।
তারপরো নির্বাচন আসে, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রিন্ট আর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জনপ্রিয়তা যাচাই, কিংবা রাজনীতি বিষয়ক প্রলাপ নিয়ে সাজিয়ে তোলে খবরের অনুষ্ঠানগুলোকে। (মিডিয়াকেও খেয়ে-পড়ে বাঁচতে হবে তো, নাকি?)
আগামী জুলাই ২৯-এ উর্ধ্বকক্ষের নির্বাচনকে সামনে রেখে, জিজি প্রেস এর করা এক সমীক্ষা বলছে, প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে র প্রতি জনমানুষের সমর্থন নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগে। ইওমিউরি শিম্বুন এর করা জরীপও অনেকটা এমন কথাই বলছে - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকা রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) র জন্যে মানুষের সমর্থন নড়বড়ে বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির থেকেও কমে গেছে।
এইসব সমর্থন কমাকমিতে শিনজো আবের চেয়ার নিয়ে কোন সমস্যা নেই আপাতত, কারণ সামনের নির্বাচনটা উর্ধ্বকক্ষের। জাপানের ডায়েট এর গঠনটা এমন,সরকারে বসতে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে হয় আর আইন পাস কিংবা বড় কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে উর্ধ্বকক্ষে । গঠনটা অনেকটা টিপিক্যাল অবশ্য।
কাজেই, উর্ধ্বকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও আপাতত চেয়ার নিয়ে টানাটানির আশংকা কম, কিন্ত,সরকার চালাতে বিরোধিতার মুখোমুখি হতে পারে - সেই আশংকাটা জোরেসোরেই আছে। সেইখানেই এলডিপির ভয়।
২.
শিনজো আবে কোন নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেননি, তিনি এসেছিলেন তার পূর্বসুরি জুনিচিরো কোইজুমি গত অক্টোবরে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অবসর নেবার পর। মি. আবে নারী ভোটারদের মাঝে সমর্থন পাবার জন্যে যথেষ্ট সুদর্শন, রাজনীতির সাথে তিন-চার প্রজন্ম জড়িত এমন পরিবারে সোনার চামচ মুখে জন্ম , পিতা ছিলেন বিদেশমন্ত্রী আর মাতামহ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়েও পরবর্তীসময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন অনেকটা সময়।
শিনজো আবে, আপাদমস্তক সুযোগবাদী ও ধনিকশ্রেণীর প্রতিনিধি আর মনেপ্রাণে লালন করেন কট্টর "জাতীয়তাবাদী মৌলবাদ"।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ভুলগুলোর (যুদ্ধাপরাধীদের বীর মনে করা কিংবা সেবাদাসী হিসেবে দশ মিলিয়নের মতো চীন-কোরিয়া বা ভিয়েতনামের মেয়েদের অপমান) ব্যাপারে ক্ষমা চাইতে অনীহা দেখানোর যে মৌলবাদী নীতি - তিনি সেটাই ধারণ করেন।
সে যাক,ইতিহাস নিয়ে দুঃখ ছাড়া আর বলার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী আবে র শুরুটা হয়েছিল মধুচন্দ্রিমার মতো, গত অক্টোবরে দায়িত্ব নেবার পর।
সস্ত্রীক বেইজিং আর সউল চীন সফরের মধ্য দিয়ে শুরু, তিক্ত সম্পর্কে কিছু মিষ্টতা আসবে - প্রত্যাশা ছিলো সবার । সে আশার গুড়ে বালি দিয়ে, ফলাফল ছিল শূন্য আর পুরো ব্যাপারটা ছিল আইওয়াশ।
তারপর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তার সরকারের ব্যর্থতার লিস্টিটা লম্বাই হয়েছে শুধু। দুর্নীতি আর অর্থের ব্যবহারে অস্বচ্ছতার কারণে একের পর এক মন্ত্রী/দপ্তরপ্রধানকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, কৃষিমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত সম্মান বাঁচাতে আত্মহননে মুক্তি খুঁজেছেন ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্য মেয়েরা সন্তান জন্মদানের যন্ত্র , প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলা ছাড়া যুদ্ধ শেষের উপায় ছিলনা - এরকম একেরপর এক বেফাঁস বক্তব্য ও তার পরবর্তী ফলাফল প্রধানমন্ত্রী আবের দায়িত্বকে করে তুলেছে কঠিনতর।
এইসব পরিস্থিতিতেই জনপ্রিয়তার এই নিম্নমুখিতা।
৩.
আগামী জুলাই ২৯শেই উর্ধ্বকক্ষের নির্বাচন হবে।
দেখা যাবে, সব সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে, প্রধানমন্ত্রী আবে র নেতৃত্বাধীন এলডিপি অন্য সময়ের মতো মোটামুটি ভালোভাবেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হবেন।
কারণ, ভোট দেবে বড়োজোর ২০ শতাংশ জনমানুষ, বয়স অনুযায়ী খুঁজলে দেখা যাবে তরুণ বা মধ্যবয়েসী প্রজন্মের উপস্থিতি শূন্যের কাছাকাছি।
ধনী-গরীব বৈষম্যের প্রকট আকার ধারণ কিংবা বার্ধক্যসময়কালীন ইন্স্যরেন্সের যে সরকার পরিচালিত ব্যবস্থা সেটার লেজেগোবড়ে আকার নেয়া - কতো সমস্যার মাঝেও পরিবর্তন চাইবেনা কেউ ।কারণ, সামনে অপশন নেই কোন।
যাকেই ভোট দেয়া হোক না কেনো, সেই একই গল্প তৈরি হবে।
সেই সরকারি অর্থের অপব্যবহার, সেই বার্ধক্য ইন্স্যুরেন্স নিয়ে লেজেগোবড়ে করে ফেলা ।
দেশটা টিকে থাকবে সাধারণ মানুষের চেষ্টা আর শ্রমের উপর। সরকারে কে আছে, সেটা চিন্তা না করেই কাজ করে যাবে জনমানুষ।
মাঝেমধ্যে মনে হয়, কোন কর্পোরেট সংস্থা - যারা ট্যাক্স এর বিনিময়ে সার্ভিস দেবে - তাদেরকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দিলেই তো সব ল্যাঠা চুকে যায়।
এইসব নির্বাচন-নির্বাচন খেলা আর অর্থহীন গণতন্ত্রের আসলেই দরকার আছে?
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও কথাটা ভেবে দেখা দরকার - অবশ্য,নিজস্ব অবস্থার দৃষ্টিকোণ থেকে।
----------
তথ্যসূত্র: ইওমিউরি শিম্বুন, টিভি নেটওয়ার্ক টিবিএস এর নিউজ২৩, বিবিসি
ছবিসূত্র: নাসা, নাসা কপিরাইট পলিসি , কৃতজ্ঞতা : উইকিপিডিয়া
-------------
০.
জাপান।
১.
সরকারে কে এলো আর গেলো - এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারো এই দেশটায়। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে - এমন খবরে আগ্রহ নেই রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পর্কহীন কেউ ছাড়া, তরুণ বা বৃদ্ধ বয়েসী কারও।
তারপরো নির্বাচন আসে, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রিন্ট আর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জনপ্রিয়তা যাচাই, কিংবা রাজনীতি বিষয়ক প্রলাপ নিয়ে সাজিয়ে তোলে খবরের অনুষ্ঠানগুলোকে। (মিডিয়াকেও খেয়ে-পড়ে বাঁচতে হবে তো, নাকি?)
আগামী জুলাই ২৯-এ উর্ধ্বকক্ষের নির্বাচনকে সামনে রেখে, জিজি প্রেস এর করা এক সমীক্ষা বলছে, প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে র প্রতি জনমানুষের সমর্থন নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগে। ইওমিউরি শিম্বুন এর করা জরীপও অনেকটা এমন কথাই বলছে - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকা রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) র জন্যে মানুষের সমর্থন নড়বড়ে বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির থেকেও কমে গেছে।
এইসব সমর্থন কমাকমিতে শিনজো আবের চেয়ার নিয়ে কোন সমস্যা নেই আপাতত, কারণ সামনের নির্বাচনটা উর্ধ্বকক্ষের। জাপানের ডায়েট এর গঠনটা এমন,সরকারে বসতে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে হয় আর আইন পাস কিংবা বড় কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে উর্ধ্বকক্ষে । গঠনটা অনেকটা টিপিক্যাল অবশ্য।
কাজেই, উর্ধ্বকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও আপাতত চেয়ার নিয়ে টানাটানির আশংকা কম, কিন্ত,সরকার চালাতে বিরোধিতার মুখোমুখি হতে পারে - সেই আশংকাটা জোরেসোরেই আছে। সেইখানেই এলডিপির ভয়।
২.
শিনজো আবে কোন নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেননি, তিনি এসেছিলেন তার পূর্বসুরি জুনিচিরো কোইজুমি গত অক্টোবরে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অবসর নেবার পর। মি. আবে নারী ভোটারদের মাঝে সমর্থন পাবার জন্যে যথেষ্ট সুদর্শন, রাজনীতির সাথে তিন-চার প্রজন্ম জড়িত এমন পরিবারে সোনার চামচ মুখে জন্ম , পিতা ছিলেন বিদেশমন্ত্রী আর মাতামহ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়েও পরবর্তীসময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন অনেকটা সময়।
শিনজো আবে, আপাদমস্তক সুযোগবাদী ও ধনিকশ্রেণীর প্রতিনিধি আর মনেপ্রাণে লালন করেন কট্টর "জাতীয়তাবাদী মৌলবাদ"।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ভুলগুলোর (যুদ্ধাপরাধীদের বীর মনে করা কিংবা সেবাদাসী হিসেবে দশ মিলিয়নের মতো চীন-কোরিয়া বা ভিয়েতনামের মেয়েদের অপমান) ব্যাপারে ক্ষমা চাইতে অনীহা দেখানোর যে মৌলবাদী নীতি - তিনি সেটাই ধারণ করেন।
সে যাক,ইতিহাস নিয়ে দুঃখ ছাড়া আর বলার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী আবে র শুরুটা হয়েছিল মধুচন্দ্রিমার মতো, গত অক্টোবরে দায়িত্ব নেবার পর।
সস্ত্রীক বেইজিং আর সউল চীন সফরের মধ্য দিয়ে শুরু, তিক্ত সম্পর্কে কিছু মিষ্টতা আসবে - প্রত্যাশা ছিলো সবার । সে আশার গুড়ে বালি দিয়ে, ফলাফল ছিল শূন্য আর পুরো ব্যাপারটা ছিল আইওয়াশ।
তারপর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তার সরকারের ব্যর্থতার লিস্টিটা লম্বাই হয়েছে শুধু। দুর্নীতি আর অর্থের ব্যবহারে অস্বচ্ছতার কারণে একের পর এক মন্ত্রী/দপ্তরপ্রধানকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, কৃষিমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত সম্মান বাঁচাতে আত্মহননে মুক্তি খুঁজেছেন ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্য মেয়েরা সন্তান জন্মদানের যন্ত্র , প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলা ছাড়া যুদ্ধ শেষের উপায় ছিলনা - এরকম একেরপর এক বেফাঁস বক্তব্য ও তার পরবর্তী ফলাফল প্রধানমন্ত্রী আবের দায়িত্বকে করে তুলেছে কঠিনতর।
এইসব পরিস্থিতিতেই জনপ্রিয়তার এই নিম্নমুখিতা।
৩.
আগামী জুলাই ২৯শেই উর্ধ্বকক্ষের নির্বাচন হবে।
দেখা যাবে, সব সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে, প্রধানমন্ত্রী আবে র নেতৃত্বাধীন এলডিপি অন্য সময়ের মতো মোটামুটি ভালোভাবেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হবেন।
কারণ, ভোট দেবে বড়োজোর ২০ শতাংশ জনমানুষ, বয়স অনুযায়ী খুঁজলে দেখা যাবে তরুণ বা মধ্যবয়েসী প্রজন্মের উপস্থিতি শূন্যের কাছাকাছি।
ধনী-গরীব বৈষম্যের প্রকট আকার ধারণ কিংবা বার্ধক্যসময়কালীন ইন্স্যরেন্সের যে সরকার পরিচালিত ব্যবস্থা সেটার লেজেগোবড়ে আকার নেয়া - কতো সমস্যার মাঝেও পরিবর্তন চাইবেনা কেউ ।কারণ, সামনে অপশন নেই কোন।
যাকেই ভোট দেয়া হোক না কেনো, সেই একই গল্প তৈরি হবে।
সেই সরকারি অর্থের অপব্যবহার, সেই বার্ধক্য ইন্স্যুরেন্স নিয়ে লেজেগোবড়ে করে ফেলা ।
দেশটা টিকে থাকবে সাধারণ মানুষের চেষ্টা আর শ্রমের উপর। সরকারে কে আছে, সেটা চিন্তা না করেই কাজ করে যাবে জনমানুষ।
মাঝেমধ্যে মনে হয়, কোন কর্পোরেট সংস্থা - যারা ট্যাক্স এর বিনিময়ে সার্ভিস দেবে - তাদেরকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দিলেই তো সব ল্যাঠা চুকে যায়।
এইসব নির্বাচন-নির্বাচন খেলা আর অর্থহীন গণতন্ত্রের আসলেই দরকার আছে?
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও কথাটা ভেবে দেখা দরকার - অবশ্য,নিজস্ব অবস্থার দৃষ্টিকোণ থেকে।
----------
তথ্যসূত্র: ইওমিউরি শিম্বুন, টিভি নেটওয়ার্ক টিবিএস এর নিউজ২৩, বিবিসি
ছবিসূত্র: নাসা, নাসা কপিরাইট পলিসি , কৃতজ্ঞতা : উইকিপিডিয়া
মঙ্গলবার, জুলাই ২৪, ২০০৭
ধার করা চিত্রমালা - বিবিসি থেকে
বাংলাদেশে সামরিক শাসন - কী ভাবছেন সাধারণ মানুষ - বিবিসি থেকে।
(নিচের "পুরো পোস্ট পড়ুন" লিংকে গুঁতো দিন)
(নিচের "পুরো পোস্ট পড়ুন" লিংকে গুঁতো দিন)
রবিবার, জুলাই ২২, ২০০৭
নিঃশব্দ দিন যায়
কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।
জীবনের অনেকটা সময় ধরে নিজেকে সাহস দিয়েছি, ওই একটা কথা বলে -টাইম ইজ এ্যা গ্রেট হিলার।
এখন আর সে অবস্থাও নেই।
সময় গেলে দুঃখগুলোর হাত-পা গজাবে, তারপর আমাকে ঘিরে ফেলবে - জানি ।
সকাল থেকে শুয়ে আছি, মানে, রাত থেকে - একবার ঘুম ভেঙেছে ১১টায় - হোম ডেলিভারি সার্ভিস এর ধাক্কায়, বাজারের প্যাকেটটা যেমন এসেছে তেমনিই আছে।
আবার শুয়েছি, এখন উঠলাম - বুঝতে পারছি, পাঁচটা বাজছে - ঘড়ি দেখে নয়, প্রতিদিন বেজে যাওয়া বিকাল পাঁচটা বাজার বাদ্য শুনে।
পেটে দানাপানি কিছু পড়ে নি ।
টু-থাউজেন্ড ওয়ান - এ স্পেস ওডিসি র শেষ দৃশ্যগুলোতে একা এক কক্ষে পায়চারি করতে করতে বুড়ো হয়ে যাওয়া বাউম্যান এর মতো মনে হতে থাকে নিজেকে এবং নিজের পার করা দিনগুলোকে।
নিঃশব্দ দিনের নীরবতা ভেঙে ফেলার সাহস পাই না।
---------
এই পোস্টগুলো কারো পড়া অর্থহীন - তাই আরএসএস ফিড বন্ধ করে রাখলাম।
কৃতজ্ঞতা জানাই এইখানে পা রাখার জন্যে।
জীবনের অনেকটা সময় ধরে নিজেকে সাহস দিয়েছি, ওই একটা কথা বলে -টাইম ইজ এ্যা গ্রেট হিলার।
এখন আর সে অবস্থাও নেই।
সময় গেলে দুঃখগুলোর হাত-পা গজাবে, তারপর আমাকে ঘিরে ফেলবে - জানি ।
সকাল থেকে শুয়ে আছি, মানে, রাত থেকে - একবার ঘুম ভেঙেছে ১১টায় - হোম ডেলিভারি সার্ভিস এর ধাক্কায়, বাজারের প্যাকেটটা যেমন এসেছে তেমনিই আছে।
আবার শুয়েছি, এখন উঠলাম - বুঝতে পারছি, পাঁচটা বাজছে - ঘড়ি দেখে নয়, প্রতিদিন বেজে যাওয়া বিকাল পাঁচটা বাজার বাদ্য শুনে।
পেটে দানাপানি কিছু পড়ে নি ।
টু-থাউজেন্ড ওয়ান - এ স্পেস ওডিসি র শেষ দৃশ্যগুলোতে একা এক কক্ষে পায়চারি করতে করতে বুড়ো হয়ে যাওয়া বাউম্যান এর মতো মনে হতে থাকে নিজেকে এবং নিজের পার করা দিনগুলোকে।
নিঃশব্দ দিনের নীরবতা ভেঙে ফেলার সাহস পাই না।
---------
এই পোস্টগুলো কারো পড়া অর্থহীন - তাই আরএসএস ফিড বন্ধ করে রাখলাম।
কৃতজ্ঞতা জানাই এইখানে পা রাখার জন্যে।
বুধবার, জুলাই ১১, ২০০৭
"জিনা ইসি কা নাম হ্যায়"
সারাদিনে তিনঘন্টার একটা লম্বা সেমিনারের পর, নিজের ডেস্কে বসে, সচলায়তনে কিছু খুনটুসি ও দুজর্নদের ভাষায় পিঠ চুলকানি মার্কা কমেন্ট করার পর, কিটক্যাট মুখে পুরে দিয়ে সহজ কিছু সমীকরণ সমাধানে যখন ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ফেরার জন্যে বেরুলাম, তখন বাইরে ঝুম বৃষ্টি, ঘড়ির কাটা পেরিয়ে গেছে ১১টার ঘর। ঘড়ির কাটা অবশ্য কোন অজুহাত নয়, ইচ্ছে করেই দেরি করা। সময় কাটানো জনভীড়ের মাঝে। সন্ধ্যায় অবশ্য পেটপুর্তির জন্যে দ্বারস্থ হয়েছিলাম অসময়ের খাদ্য-ভরসা ও খেতা পুড়ানো বিশ্বায়নের প্রতীক ম্যাকডোনাল্ডসে, কাগজের ঠোঙাটা বগলদাবা করে ডেস্কে ফিরে দেখি, মোটামুটি সুন্দরী ম্যাক-তরুণী আইস খাওয়ার চামচ দিয়ে আমাকে সালাদ খেতে বলেছেন। আমি তথাস্তু বলে তাই করি, কারণ সুন্দরীগণ যা করবেন, তাই সিদ্ধ।
দিনশেষে গবেষণার পূর্ব পুরুষদের উদ্ধার করতে যখন ইচ্ছে করে, যখন ভাবি, পিথিমীটা কী মজার, যে যেটা বোঝেনা, তাকে সেইটা করতে বসিয়ে দেয়া হয়। বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে বাড়ি ফেরায়, প্রায় খিদে নিয়ে একটা রুটি জাতীয় বস্তু চিবুতে চিবুতে সামান্য শরীর নড়াচড়া করার চেষ্টার পর একটা দিন যখন শেষ হয়, তখন বাসায় ঢোকার মুখে সারাদিনে বেশ কয়েক বার শোনা ওই গানটাই মাথায় ঘুরপাক করতেই থাকে।
জীনা ইসি কা নাম হ্যায়।
-------------------------------
মুল গান: কিসি কি মুসকুরা হাটো পে হো নিসার
ছবি : আনাড়ি ১৯৫৯, মূল ভূমিকায়: রাজকাপুর
কণ্ঠ : মুকেশ
গান ইউটিউব এর এই লিংক থেকে অডিও ট্র্যাক আকারে পরিবর্তিত
দিনশেষে গবেষণার পূর্ব পুরুষদের উদ্ধার করতে যখন ইচ্ছে করে, যখন ভাবি, পিথিমীটা কী মজার, যে যেটা বোঝেনা, তাকে সেইটা করতে বসিয়ে দেয়া হয়। বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে বাড়ি ফেরায়, প্রায় খিদে নিয়ে একটা রুটি জাতীয় বস্তু চিবুতে চিবুতে সামান্য শরীর নড়াচড়া করার চেষ্টার পর একটা দিন যখন শেষ হয়, তখন বাসায় ঢোকার মুখে সারাদিনে বেশ কয়েক বার শোনা ওই গানটাই মাথায় ঘুরপাক করতেই থাকে।
জীনা ইসি কা নাম হ্যায়।
-------------------------------
মুল গান: কিসি কি মুসকুরা হাটো পে হো নিসার
ছবি : আনাড়ি ১৯৫৯, মূল ভূমিকায়: রাজকাপুর
কণ্ঠ : মুকেশ
গান ইউটিউব এর এই লিংক থেকে অডিও ট্র্যাক আকারে পরিবর্তিত
বৃহস্পতিবার, জুলাই ০৫, ২০০৭
ঘুম ভেঙে গেছে মাঝপ্রহরে
খুব ছোটবেলায় কোন এক রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়, একা বাড়িতে নিজেকে আবিষ্কার করি, - সম্ভবত মামার বিয়েতে নানাবাড়িতে চলে গিয়েছিলো বাড়িশুদ্ধ সব মানুষ। নানাবাড়িটা ছিলো বাড়ির সামনে ভিটেজমিগুলোর ওপারে। আমি তখন চার কিংবা তিন ।
চমকে উঠেছিলাম সে রাতে, সেই বোধটা মস্তিষ্কের কোন নিউরনসমষ্টি এখনো ধরে রেখেছে তাদের বুকে। কেনো; জানা নেই । জানতে ইচ্ছে করে এইসব জীবনরহস্য কখনো-সখনো অবশ্য।
পলাশী আর বকশীবাজার এর মাঝে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি আছে সেটিতে পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো ছয় মাস, সেই সূত্রে হল যাপন করেছিলাম আটমাস মতোন।
আহসানউল্লাহ পশ্চিম ২৩৪।
থাকতাম একা একটা রুমে - তিনজনের রুমে একা - ছাত্রফ্রন্ট এর তারেক ভাই থাকতেন নিজের বাসায় আর অন্য একটা সিট কেমন যেন অবরাদ্দ গোছের। সেই রুমটায় আমি আসার বছর সাতেক আগে কে একজন বেছে নিয়েছিলো আত্মহনন - সেই মানুষটার ছেড়ে যাওয়া একটা ঘড়িও টিকটিক করতো অনেকদিন। তারেক ভাই মজা করে বলতেন, ব্যাটারি নাকি উনি কখনো বদলাননি , অশরীরী শক্তি দিয়ে চলে ঘড়িটা।
মাঝরাত্তিরে জেগে উঠতাম, বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কালো চাদর টা গাঁয়ে জড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করতাম অনেকক্ষণ । ভয় পাইনি কখনো - অশরীরী অথবা শরীরী কোন কিছুর।
দেশ ছাড়ার পর এক বছর অনেকগুলো ভিন্নসংস্কৃতির মানুষের সাথে থাকতাম, মাঝরাত্তিরে উঠলে মাতালদের মজার সব কান্ড দেখতে হতো। নিজে ওই পানীয়-সম্পর্কিত বেড়াটা ভাঙতে পারিনি কখনো, তাই মজা দেখতাম।
এখনো মাঝরাত্তিরে ঘুম ভেঙে যায়, পেপারওয়ালা ছোকরাটা তার মোটরবাইক হাকিয়ে যখন গলি ছেড়ে যায় - বাইকের লাইসেন্স থাকলে আমিও যে পার্টটাইম টা করবো, অনেকদিন ভেবেছিলাম। গা ঘেমে ওঠে, আর ঘুমুতে পারিনা ।
এক সুহৃদ কিছুদিন আগে পর্যন্ত ইনসোমনিয়ায় ভুগতো - তাকে যে পরামর্শগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো নিজেই চেষ্টা করে দেখি।
কাজ হয়না অবশ্য।
রাগ হয় নিজের উপর।
দ্বিচক্রযান নিয়ে বেরিয়ে পড়ি মাঝরাতে।
ওই গানটা সুর ধরি, যেটা মাঝেমধ্যেই মনে আসে - হরি, দিনতো গেলো, সন্ধ্যে হলো, পার করো আমারে।
------
ছবি ব্যবহার, ক্রিয়েটিভ কমন্স এর আওতায় ফ্লিকার থেকে, কৃতজ্ঞতা
চমকে উঠেছিলাম সে রাতে, সেই বোধটা মস্তিষ্কের কোন নিউরনসমষ্টি এখনো ধরে রেখেছে তাদের বুকে। কেনো; জানা নেই । জানতে ইচ্ছে করে এইসব জীবনরহস্য কখনো-সখনো অবশ্য।
পলাশী আর বকশীবাজার এর মাঝে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি আছে সেটিতে পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো ছয় মাস, সেই সূত্রে হল যাপন করেছিলাম আটমাস মতোন।
আহসানউল্লাহ পশ্চিম ২৩৪।
থাকতাম একা একটা রুমে - তিনজনের রুমে একা - ছাত্রফ্রন্ট এর তারেক ভাই থাকতেন নিজের বাসায় আর অন্য একটা সিট কেমন যেন অবরাদ্দ গোছের। সেই রুমটায় আমি আসার বছর সাতেক আগে কে একজন বেছে নিয়েছিলো আত্মহনন - সেই মানুষটার ছেড়ে যাওয়া একটা ঘড়িও টিকটিক করতো অনেকদিন। তারেক ভাই মজা করে বলতেন, ব্যাটারি নাকি উনি কখনো বদলাননি , অশরীরী শক্তি দিয়ে চলে ঘড়িটা।
মাঝরাত্তিরে জেগে উঠতাম, বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কালো চাদর টা গাঁয়ে জড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করতাম অনেকক্ষণ । ভয় পাইনি কখনো - অশরীরী অথবা শরীরী কোন কিছুর।
দেশ ছাড়ার পর এক বছর অনেকগুলো ভিন্নসংস্কৃতির মানুষের সাথে থাকতাম, মাঝরাত্তিরে উঠলে মাতালদের মজার সব কান্ড দেখতে হতো। নিজে ওই পানীয়-সম্পর্কিত বেড়াটা ভাঙতে পারিনি কখনো, তাই মজা দেখতাম।
এখনো মাঝরাত্তিরে ঘুম ভেঙে যায়, পেপারওয়ালা ছোকরাটা তার মোটরবাইক হাকিয়ে যখন গলি ছেড়ে যায় - বাইকের লাইসেন্স থাকলে আমিও যে পার্টটাইম টা করবো, অনেকদিন ভেবেছিলাম। গা ঘেমে ওঠে, আর ঘুমুতে পারিনা ।
এক সুহৃদ কিছুদিন আগে পর্যন্ত ইনসোমনিয়ায় ভুগতো - তাকে যে পরামর্শগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো নিজেই চেষ্টা করে দেখি।
কাজ হয়না অবশ্য।
রাগ হয় নিজের উপর।
দ্বিচক্রযান নিয়ে বেরিয়ে পড়ি মাঝরাতে।
ওই গানটা সুর ধরি, যেটা মাঝেমধ্যেই মনে আসে - হরি, দিনতো গেলো, সন্ধ্যে হলো, পার করো আমারে।
------
ছবি ব্যবহার, ক্রিয়েটিভ কমন্স এর আওতায় ফ্লিকার থেকে, কৃতজ্ঞতা
বুধবার, জুলাই ০৪, ২০০৭
ডিসক্লেইমার : অলেখকের ক্ষমা প্রার্থনা
প্রথমেই বলে রাখি, আমি লেখক নই।
লেখালেখি বলতে যা বোঝায়, আমার মধ্যে কোনকালেই ছিল না। কোনদিন কোন লিখিয়েদের আড্ডায় যাওয়া হয় নি, না, সুযোগই হয়নি আসলে।
আমি যা লিখি, তা লেখা না বলে কিছু খসড়া বলা ভালো। কিংবা প্রলাপ অথবা এলেবেলে - আবজাব বাক্য রচনা। নিজেই লিখি, নিজেই পড়ি - পাগলের সুখ মনে মনে - আর কি!
আজকাল যোগ দেয়ার সৌভাগ্য হয়েছে এখানে, মানে মানে সচলায়তন-এ ।
ক্ষমা প্রার্থনা করবো - আমার কাছে কেউ লেখা প্রত্যাশা করবেন না। সচলায়তন এর জন্ম হলো - কিছুই দেবার ছিল না এই শুভক্ষণে। সবার লেখাও ঠিকমতো পড়া হয়নি।
আমি এমনিতেই বেশ অপরাধবোধে ভুগি খুব তুচ্ছ ব্যাপারে, অপরাধবোধ এর লিস্টিতে আরেকটা এন্ট্রি বেড়েছে।
তাই ক্ষমা প্রার্থনা করি।
---------
সচলায়তনে প্রকাশিত ডিসক্লেইমার থেকে
লেখালেখি বলতে যা বোঝায়, আমার মধ্যে কোনকালেই ছিল না। কোনদিন কোন লিখিয়েদের আড্ডায় যাওয়া হয় নি, না, সুযোগই হয়নি আসলে।
আমি যা লিখি, তা লেখা না বলে কিছু খসড়া বলা ভালো। কিংবা প্রলাপ অথবা এলেবেলে - আবজাব বাক্য রচনা। নিজেই লিখি, নিজেই পড়ি - পাগলের সুখ মনে মনে - আর কি!
আজকাল যোগ দেয়ার সৌভাগ্য হয়েছে এখানে, মানে মানে সচলায়তন-এ ।
ক্ষমা প্রার্থনা করবো - আমার কাছে কেউ লেখা প্রত্যাশা করবেন না। সচলায়তন এর জন্ম হলো - কিছুই দেবার ছিল না এই শুভক্ষণে। সবার লেখাও ঠিকমতো পড়া হয়নি।
আমি এমনিতেই বেশ অপরাধবোধে ভুগি খুব তুচ্ছ ব্যাপারে, অপরাধবোধ এর লিস্টিতে আরেকটা এন্ট্রি বেড়েছে।
তাই ক্ষমা প্রার্থনা করি।
---------
সচলায়তনে প্রকাশিত ডিসক্লেইমার থেকে
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)