সোমবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০০৬

কনফেশন - ২

" ......
এখন আমি সব বিমানবিক স্বপ্ন দেখি,
আগুন, কিংবা পথক্লান্তি - কোনটাকে
কারণ হিসেবে দাড় করাবো এখনো ঠিক করা হয়ে ওঠেনি ।
ভালবাসা মাখানো সম্পর্ক গুলোর কাছে
কী ই বা রেখে যাবো, জানি না ।

চাকাপিষ্ট আনন্দ দের জন্যে কষ্ট হয়না যে, তাও নয় ।
তবু্ও আমার বিলু্প্তির সব প্রস্তুতি আজ সম্পন্ন ।
বিমানবিক স্বপ্নেরা এখন তৈরি ।
"
--"বিলুপ্তি" ডিসেম্বর ১৭, ২০০৬

আমি জানি আমার মধ্যে সামান্য প্রতিভার ছিঁটেফোটাও নেই - তবুও ও কবিতাটা লেখা।
আমি জানি - যখন নতুন কিছু করতে বলা হয় আমাকে, তখন ভীষন অসহায় বোধ করতে থাকি ।
কষ্ট পেতে থাকি নিজের মধ্যে - যা আমাকে দিয়ে হবার নয় -- তাই যখন করতে হয় ।

আমি ভন্ড ।
না ধর্মে বিশ্বাসী - না অবিশ্বাসী ।
না-ইসপার, না-উসপার - একটা অর্থবিহীন মাঝামাঝি অবস্থা :: কোন দলেই নেই ।
ভেঙে পড়লে ঈশ্বরকে ডাকি - সুবিধাবাদী পার্থিব জীব আর কি ।
অন্য সবার মতো - স্বাতন্ত্র্যবিহীন - নিজের প্রতি সম্মানহীন - ধর্ম-কর্ম-ঈশ্বর করেই বা কী এসে যায়, নিজেই যখন নিজের পতনের কারণ ।
নিজেই যখন তলিয়ে যাই - তখন ভুলে থাকা ঈশ্বর এসে উদ্ধার করবেন - ব্যাপারটা বড় বেশি অপটিমিস্টিক হয়ে যায় ।

অন্যেরা কী ভাবে - এই নিয়ে মাথা ঘামাই বেশি ।
হাসি, মজা করি - মিথ্যে কথা বললাম - মজা করার ভান করি - তারপরের নীরবতাটুকু খেয়াল করে না কেউ ।
(.... ধুর শালা- এবি র গান হয়ে গেলো - কনফেশন দিতে এসে প্যানপ্যান করা শুরু করলাম )

অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি কতো - কিছুতেই কিছু হয় না - তাই সেটা বাদ দিয়ে এখন অন্ধকারেও যাতে থাকা যায় সেই পথ খুঁজি । নিজেকে খোলা বই হিসেবে তুলে ধরি - তারপরে কেউ পড়তে চাইলে তাকে বাধা দিই ।
পরস্পরবিরোধিতা আমাকে কুরে কুরে খায় ।

ছেলেবেলায় ভাল ছিলাম বড্ড বেশি বোধহয় - গুডি গুডি ভাব - এই বড়বেলায় সেটা থেকে গেছে কিছুটা - তাই কারও আচরণে এ্যারোগ্যান্স দেখলে তার কাছাকাছিও যেতে ইচ্ছে করে না - এখন অবশ্য জোর করে মানিয়ে নিতে হয় উদ্ধত মানুষগুলোকেও - নিজের স্বার্থেই ।
অভিনয়ে কাঁচা - তাই ঔদ্ধত্য যে সহ্য করতে পারি না - এটা বুঝে ফেলে অবশ্য গৌরবে মাটিতে পা না ফেলা মৃত্তিকাজীবগুলো ।
কী আর করা - আমার মতো পুরনো তেলাপোকাও যে আজো বিলুপ্ত হয়ে যায় নি - এইটুকু বুঝুক - এটাই চাওয়া ।

মাঝে মাঝে কান্না পায় নানানরকম কারণে ।
একটা বড় মানুষ কাঁদছে - তাও আবার ছেলে মানুষ - ব্যাপারটা দেখতে খুব একটা ভালো লাগার কথা নয় ।
তাই বুকের ভেতরে বৃষ্টি ঢাকি ।

বাইরে ভীষন বৃষ্টি হচ্ছে - ঝুম বারিধারা - সেই সাতসকালে মুঠোফোনে ফরওয়ার্ড হওয়া মেইল পেয়ে ঘুম ভেঙেছে - তাই এই বছর শেষের ছুটির সময়েও ছুটে এলাম সন্দর্ভ বিষয়ক হাবিজাবি র জন্যে ।
( ....ধুর, কনফেশনটা যুতসই হচ্ছে না )

বড্ড মনে পড়ে ছেলেবেলাটা - সেই বন্ধুগুলো, পুরনো ধূসর হয়ে গেছে সব মুখ এখন ।
স্বপ টার সাথে অনেকদিন দেখা নেই - বেশ মুটিয়ে গ্যাছে শুনেছি :: একবার উল্টো পথে আসা রিকশায় আধো অন্ধকারে দেখেছিলাম - সাথে ওর বান্ধবী - তাই জোরে ডাক দিতে পারিনি ।
ইচ্ছে করেছিল অবশ্য ডাকতে ।
কিংবা অবন, সেই যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকলো - আর কমানোর চেষ্টা করা হয়নি - শেষবার কথা হয়েছিল আহসানউল্লাহ র গেস্ট রুমের সামনে - আমি কালো চাদরে বামপন্হী টাইপের একটা ভাব নিয়ে হেঁটে যাওয়ার পথে - তোরে তো জোশ্ লাগতেসে - এরকম একটা কিছু হবে ওর বলা কথাটা ।
সব শালা ধূসর হয়ে গ্যাছে - আমার কী দোষ !
সব শালা বাস্তববাদী হয়ে গেছে ।

আমিই বা কতটা আগের মত আছি ?
বদলে গেছি অনেক ।
তবু্ও ধরি মাছ না ছুঁই পানি র স্বভাবটা বদলায় নি - ঝামেলা দেখলেই খেলবো না বলেই পালানোর স্বভাবটা পাল্টায়নি আজও ।
এই যে - জীবনটা কষ্টকর ঠেকছে বলে পালাতে চাইছি সবকিছু ছেড়ে ।
রবি রেমান তো পালায় নি ।
তবে আমি পালাই ক্যানো ?

-------------------------------------

কোন মন্তব্য নেই: