বাংলাদেশের সংবিধান কি-ওয়ার্ড দিয়ে আপনি গুগলে ঢুঁ দিয়ে খুব একটা কিছু পাবেন না ।
এখনো ইলেকট্রনিক পৃথিবীতে আমাদের রাষ্ট্রীয় কিংবা জাতীয় তথ্য খুঁজে পাবার মত সময় আসেনি । গত সামারে একটা অনুবাদ জাতীয় কামলা খাটতে গিয়ে সংবিধান বা রাষ্ট্রনীতি নিয়ে বেশ লম্বা সময় সার্চ দিয়েও কাজে লাগার মত খুব একটা ফল পাইনি ।
সে যাইহোক, তাতে কিছু যায় আসে না ।
উল্টো, আজকাল সবই দুটো-একটা সার্চ দিয়েই কিছু একটা বের করে ফেলা বিরক্তিকর মনে হয় ।
ডিজিটাল বৈষম্য কিংবা এই জাতীয় কোন জটিল বিষয় নিয়ে আমার লেখাটা অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করি টাইপের ব্যাপার-স্যাপার হয়ে যেতে পারে :: কাজেই সেই ব্যাপারে এখানেই ফুল স্টপ দিই ।
এবার আসল কথায় আসি ।
গত কয়েকদিন ধরে এই শব্দটি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে বা কানে বাজছে - সংবিধান - আমাদের জনমানুষের শতকরা ৯৯.৯ ভাগই জীবনে চোখ দিয়েও দেখেন নি কিংবা ব্যাপারটার অর্থই বুঝেন না শতকরা ৭০-৮০ ভাগ- এরকম একটি জটিল বিষয় । নির্বাচন চালানোর প্রধান ফেরেশতা ঠিক করার জন্যে সংবিধানে কত নম্বর সংশোধনীতে কী লেখা আছে - নেহায়ত পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষার্থী না হলে কেউ জানেন বলে আমার মনে হয় না ।
ইদানীং আমার ঘুমুতে বেশ ভোর হয় - ততক্ষণে টিভিতে ভোর চারটার ঘুমজাগানিয়া খবর শুরু হয়ে যায় -বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, জাপানীদের সেনস অব হিউমার খুব একটা খারাপ না হলেও ভোর চারটার সেই অনুষ্ঠানটির নাম সেই রকমই একটা কিছু, সুন্দরী উপস্থাপকরা বেশ ভয়াবহ হাসিমুখ নিয়ে মজার সব খবর নিয়ে হাজির হন - ভোরবেলা ওঠা মানুষগুলোর মন ভালো করে দেয়ার জন্যে বোধহয় ।
সেটা গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যাপার নয় যদিও - হঠাৎ দেখলাম একটা বাংলাদেশ বাংলাদেশ টাইপের ফুটেজ ভেসে উঠছে - একটা লোককে সবাই ঘিরে ধরে পেটাচ্ছে - বাঁশ জাতীয় কিছু একটা দিয়ে পেটানো হচ্ছে - ভালো করে বুঝে ওঠার আগেই খবরটা শেষ হয়ে যায় । সুন্দরী উপস্থাপককে বেশ ব্যথিতই মনে হলো এক মুহূর্ত ।
আজকে ইউটিউব ঘাটতে গিয়ে পেয়ে গেলাম সেই দৃশ্যটা । হ্যাঁ, সুস্থ মানুষের দেখার উপযোগী নয় অবশ্যই ।
সেই অসহায় মানবসন্তানটিকে শিবি×কর্মী হিসেবে দাবি করেছে কয়েকজন ব্লগার সামহোয়্যার-ইন -এ- আমি সামহোয়্যার-ইন -এ লিখিনা - কারণ আমরা বাঙালিরা খুব সহজেই একটা প্লাটফর্মকে মাছের বাজার করে ফেলতে দেরি করি না - আর বাজাদ কিংবা বাআলী টাইপের একটা স্ট্যান্স নিয়ে লড়াই শুরু করে দিই ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে জা×য়াত শিবি× কে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও ঘৃণা বোধ করি - ধর্মের দোহাই দিয়ে ভন্ডামি, আমাদের রাষ্ট্রের জন্মের বিরোধিতা এবং মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা - সবমিলিয়েই এ ঘৃণা । একই সাথে আশংকাও বোধ করি না - তাও নয় - কারণ এরা ভীষণ সুসংগঠিত এবং বুদ্ধিমান - ইন্টারনেট এর মত একটা শক্তিশালী মাধ্যমেও যে এরা কম যায় না - এটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হচ্ছে না ।
কিন্তু, সেই মানুষটি - হ্যাঁ সেই অসহায় মানুষটি - কোন্ দলের কিংবা আসলেই রাজনীতির সাথে জড়িত কি না - এটাও নিশ্চয়ই প্রশ্ন তোলার মত কোন বিষয় নয় । একজন মানুষকে একদল শ্বাপদ ঘিরে ফেলেছে - সে হিন্দু বা খ্রিস্টান বা নাস্তিক, উত্তরপন্হী কিংবা দক্ষিণ - কিচ্ছু যায় আসে না আমার । উল্টোপাল্টা কথা বলা শেখ হা×না র ভক্ত কি না কিংবা এক দশক আগে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে অবাঞ্চিত ঘোষিত হওয়া নিজা× এর কথায় ওঠবস করতো কি না - এটাও বিবেচ্য নয় ।
একজন মানুষ, তার জীবনের শেষ কটি ক্ষণ - সেই জিনিষ নিয়ে আপনারা গবেষণা করছেন - আপনারা মাৎস্যন্যায় এর এই যুগের জন্যে উপযুক্ত মানুষ ।
আরো বেঁচে থাকুন আপনারা - এইসব অসহায়ের অভিশাপ মাথায় নিয়ে ।
আর হ্যাঁ, আপনারা পছন্দমতো বাকি ১০ জন ফেরেশতা পেয়ে গেছেন আজ - আপনাদের সংবিধান রক্ষা হয়েছে ।
অভিনন্দন আপনাদের ।
সবার মঙ্গল হোক - এই কামনা করছি ।
-----
* বাঁধ ভাঙার আওয়াজ এর জন্যে লেখা, প্রকাশ লিংক এখানে
২টি মন্তব্য:
লেখা যদি নিজের জন্য হয় তবে এখানে পোস্ট করার যথার্থতা প্রতীয়মান হয়, তবে যে লেখা আপনি আরো অনেককে পড়তে দিতে চান সেগুলো সামহোয়ারে দিলে আমরাও কিছু টেস্ট আস্বাদন করতে পারবো। বুঝতেই তো পারেন অনেক উইন্ডো খোলা এখন বিরক্তিকর হয়ে গেছে। একটাতে পাঠক ইন্টারএ্যাকশন ও প্রকাশ,আর্কাইভ সব সুবিধা পাওয়া গেলে অন্য উইন্ডো কেন খুলবো?
তবে লেখা পড়ে ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ আপনাকে এখানে পা দেয়ার জন্যে ।
এ জায়গাটা আছে সামহোয়্যার চালুর আগে থেকে, সেজন্যে পুরনো এ ব্লগ ছেড়ে যাওয়া হয় না ।
হয়তো এখন থেকে লিখবো, কপি-পেস্ট করে :)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন