বুধবার, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০০৬

একটি প্রায়-রাজনৈতিক প্রলাপ

দেশে এসে পড়লাম , অল্প সময়ের জন্যে ।
খুব চোখে পড়ছে মুঠোফোন বিপ্লব, লোডশেডিং আর অনিশ্চয়তা - অনেক কিছু নিয়ে ।

মুঠোফোন বিপ্লব এই অর্থে বলছি , মনোপলি কিংবা প্রায় মনোপলি ভেঙে বেড়েছে প্রতিযোগিতা - আমাদের বাণিজ্য সংস্কৃতির দিক থেকে চিন্তা করলে প্রায় অন্যজগতের টার্ম - ক্রেতা অধিকার কিংবা কাস্টমার সার্ভিস - নামের জিনিষগুলো কিছুটা হলেও অনুভূত হচ্ছে :: সে যাই হোক, মুক্তবাজার অর্থনীতির সেই টুকু সুফল অবশ্যই অভাবিত নয় । আর স্থূল দৃষ্টিতে এই সময়ের ইতিবাচক উন্নতি বলতে সেটুকুই ।

কিন্তু - কিন্তু, অসমতা প্রকট মানুষের মাঝে - মধ্যবিত্তের দারিদ্রের সূচক নামেনি, অর্থনৈতিক পার্থক্য নিয়েছে অন্যরকম উর্ধ্বগতি । বাজারে অর্থের আনাগোনা বেড়েছে, অর্থের রং নিয়ে কোন প্রশ্ন করব না - পকেট গরম মানুষের মাঝে টাউট আর বাটপার এর সংখ্যা বেশি, এর অস্বীকার কেউ করবেন না নিশ্চয়ই , রাতারাতি টিভি চ্যানেল বানিয়ে ফেলা আলু টাইপের নামের মানুষেরা যে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণে, সেখান থেকে এর থেকে বেশি প্রত্যাশা আমরা করতে পারি না ।

বিদ্যুৎ এর আনাগোনা - একটা সময় আগে হাইস্কুল পাসের রাষ্ট্রীয় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যেরকম অনুভব করেছিলাম - অবস্থা তার থেকেও দিনদিন খারাপের দিকে গেছে - মফস্বলের জন্যে আমাদের আলোর বরাদ্দ নেই- কানসাটের কথা আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি - আমি এই মুহূর্তে যে জায়গাটাতে আছি, সেটা কানসাট থেকে খুব বেশি দূরে নয় কিংবা ফুলবাড়ি থেকেও - না, অবস্থা পাল্টায়নি - এই মুহূর্তে আমার মেশিন চলছে ব্যাটারিতে - আমাদের মতো ভেঁড়া গোত্রের মানুষ কখনো স্বস্তি পাবে বলে মনে হয় না ।

ও হ্যাঁ, আমাদের অতি-রাজনীতি-সচেতন মানুষদের জন্যে সামনে আসছে নির্বাচন - হিসাব-নিকাশও শুরু করে ফেলেছে কদাকার রাজনৈতিক দলগুলো - ঘাতকদের দল আর ১৬ বছর আগে জনমানুষের লাথি খেয়ে বিদায় নেয়া নির্লজ্জ বেহায়া - এই সময়টাতে নিজেদের মূল্যবান মনে করে জিহ্বা দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে নেয় - সব অদ্ভূত মস্তিস্কের সুযোগসন্ধানীরা আগামী পাঁচ বছর আমাদের পশ্চাৎদেশে লাথি দেবার অধিকারটুকু অর্জনের জন্যে হায়েনা আর কুকুর সব্বাইকে সাথে নেয় । যে পক্ষ হায়েনা আর কুকুরকে সাথে পায়, তারা তাদের দূর্গন্ধযুক্ত মুখ দিয়ে পুরনো হিসাব মুছে ফেলতে বলে, আর অন্য পক্ষ পুরনো খাতা নিয়ে চিৎকার করতে থাকে ।

ঈশ্বর, সেই পুরনো গল্প, সেই পুরনো নাটকের রূপায়ন - এমনকি হয়না - আমরা একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখবো - সব হায়েনা, কুকুর আর সুযোগসন্ধানী শেয়াল মরে গেছে ? আমি এই প্রথম কারো মৃত্যু কামনা করছি ।

আমি বিপ্লবের সমর্থক নই - ফুলবাড়ি কিংবা কানসাট এর মতো ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু - এটাই কামনা করবো - স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রখন্ডে মতের প্রতিফলন করার জন্যে জনমানুষেরই অর্থে পরিচালিত শৃঙ্খলাবাহিনীর মুখোমুখি হতে হবে - এটা কারও আশা হতে পারে না ।

ও, স্যরি - আমি এই রাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত নাগরিক কি না - সে ব্যাপারে কোন সমর্থন আমার কাছে নেই - আমার ভোটাধিকার নেই - আর থাকলেই বা কী করতাম ?

কাকেই বা ভোট দিতাম ?

৩টি মন্তব্য:

Tareq Nurul Hasan বলেছেন...

আমার অবশ্য ভোটাধিকার আছে। গত নির্বাচনে সে সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু, একই ব্যাপার, কাকে দিব- অনেক ভেবেও সেই সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে ভোট দিতেই যাই নি।

Tareq Nurul Hasan বলেছেন...

আমার অবশ্য ভোটাধিকার আছে। গত নির্বাচনে সে সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু, একই ব্যাপার, কাকে দিব- অনেক ভেবেও সেই সিদ্ধান্তে আসতে না পেরে ভোট দিতেই যাই নি।

সৌরভ বলেছেন...

কনফুসিয়াস, প্রথমেই দেরির জন্যে স্যরি ।
আমার আসলেই কোনো ভোটাধিকার নেই - নেই ।