বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৮, ২০০৫

দুঃস্বপ্ন

আপনারা কেউ কি শুনতে পাচ্ছেন না
কোনও পদশব্দ ?দেখতে কি পাচ্ছেন না

ভয়ন্কর একপাল না জন্তু-না মানুষ
তেড়ে আসছে চৌদিক খেকে ? ওদের দাঁত-নোখে
লেগে আছে পুরনো আর নতুন রক্তচিহ্ন
,
মানুষের হাড় দিয়ে ওরা পেটাচ্ছে কান-ফাটানো
ঢাকঢোল
;


<শামসুর রাহমান :: আমার একটি দুঃস্বপ্ন :: সৌন্দর্য আমার ঘরে, বিউটি বুক হাউস, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৮>
..........................................................................................

এরপর আমরা কোথায় যাবো ?
সম্ভবতঃ আমরা দেয়ালের থেকে খুব বেশি দূরত্বে নেই , এবং আর সামান্য পিছিয়ে গেলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে
রাজনীতি এবং রাষ্ট্র শাসন নামক ভীষণ জটিল জিনিষগুলোর সাথে জড়িত সম্মানিত রা কি দেয়ালটা দেখতে পাচ্ছেন না
?


মফস্বলে থাকি, কাজেই হরতালেও খুব একটা দুশ্চিন্তা ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে যাই, এবং ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা একটা মফুস্বলে ভাব উপভোগ করি, কখনও কখনও দাঁড়িয়ে পড়ি মিছিল দেখার জন্য ; ছোটবেলা থেকে দেখা ছবিটা পাল্টায় না দেখে কিছুটা অবাকও লাগে


আর বোধহয় সেটা করার সাহস হবে না , আপাততঃ মরতে চাচ্ছি না কোন কূপমণ্ডুক কাপুরুষের বোমায় কিংবা গ্রেনেডে
খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রধান দুটো রাজনৈতিক দলের একে অপরকে দোষারোপ করে চ্যাঁচামেচি শুরু হয়ে গেছে এবং আমরাও ভ্যাঁড়ার মত কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে খেলাটায় নিজেদের ভূমিকা বুঝে উঠতে পারছি না কি আর করা, আসুন, আমরা ক্যাবল টেলিভিশনে সবার কাভারেজ উপভোগ করি এবং তালি বাজাই মাঝে-মধ্যে অন্য বারের মত এবারও

<রাজশাহী:: আগস্ট ১৮ :: ২:০৫ >

সোমবার, আগস্ট ১৫, ২০০৫


নতুন কুঁড়ি Posted by Picasa

রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০০৫

বন্ধুরা

কলেজ জীবনের পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হয়, ইদানীং নাম মনে পড়েনা মাঝেমাঝে ; অপেক্ষা করি সাথে থাকা অন্য কেউ একজন নামটা বলে উঠবে , নাম না জেনেও কথা বলতে সমস্যা হয় না অবশ্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, তবে বিব্রতকর ব্যাপার যে ঘটেনি কখনো, তাও নয়কলেজে সময়টা অল্প, সম্ভবতঃ তাই মস্তিষ্কের ডেটাবেজে কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লুকিয়ে থাকা সেই নামটা খুঁজে পাই নাঅবশ্য স্কুলের বন্ধুদের একেবারে অফিসিয়াল নাম এবং আদর করে দেওয়া নাম ( যেমন, বিজ্ঞানী, কষ্ট কিংবা ঘুম :: আরো কত কিছু ) সহ মনে পড়ে খুব সহজেই

আমাদের স্কুলে ক্লাস ক্যাপ্টেনের একটা কাজ ছিল :: রেজাল্ট বা অন্য কোন প্রয়োজনে সবার নামের লিস্ট দরকার পড়লে তৈরি করে দেওয়া :: এই কাজ করতে করতে পুরো ক্লাসের নেইম-লিস্ট টা মুখস্থ হয়ে থাকতো

বন্ধুরা বেশিরভাগই গ্রাজুয়েশন শেষের পথে কিংবা কারো কারো শেষ; খবর জিজ্ঞেস করলে শুনতে পাই, "দোস্ত, বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করতেছি ।" উত্সাহিত করি, অনেকদিন পর দেখা উপলক্ষে এক কাপ চা ও হয়ে যায় , তারপর নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি, "বাইরে ই সব ভালো, তাই না, রবি রেমান? নদীর ওপার টাতেই সব সুখ ! "


***********************************************************
<আগের পোস্টে এ একটা অসম্পূর্ণ তথ্য ছিল এক সুহৃদ জানিয়েছেন, চক্র এর প্রথম প্রকাশ :: জানুয়ারি ২০০৪ (খন্ড আকারে ); ধন্যবাদ তাকে আমি যেটা পড়ছিলাম, সেটা অখন্ড সংস্করণ এবং প্রথম প্রকাশ :: ফ্রেবুয়ারি ২০০৫ >

শনিবার, আগস্ট ১৩, ২০০৫

চক্র

একটি ছোট্ট নৌকো পাল তুলে পাড়ি দিচ্ছে অনন্ত আকাশে ধীর, অতি ধীর তার গদিত নৌকোয় কয়েকজন মানুষ একটি শিশু, একটি বালক, এক কিশোর, একজন যুবক এবং জনৈক বৃদ্ধ নৌকোর গতি ধীর চারদিকে গাঢ় অন্ধকার মাঝে মাঝে ছুটে আসছে অনিকেত উল্কা মহাজাগতিক ধুলো মাঝেমধ্যে শোনা যাচ্ছে দূরাগত মহাবিস্ফোরণ বা সংঘর্ষ বা ঘূর্ণনের শব্দ নক্ষত্রমণ্ডলীয় ক্ষীণ আলোর আভায় তারা পরস্পরের মুখ দেখতে পাচ্ছে তারা চলেছে ধীরে কিন্তু অনায়াসে পেরিয়ে যাচ্ছে গ্রহ, নক্ষত্র, অতিকায় তারা বা কৃষ্ণগহ্বর

বুড়োর হাতে পেনসিল, হাঁটুর ওপর রাখা একটা খাতা বুড়ো মন দিয়ে একটা অঙ্ক কষছে যুবকটি জিজ্ঞেস করে, আর কত দূর ?
বুড়ো খরখরে গলায় বলে, আর বেশি দূর নয় বাবারা এসে গেছি তবে ঠিকানাটা বড্ড প্যাঁচালো, অনেকটা ধাঁধাঁর মতো এই অঙ্কটা মিলে গেলেই ঠিকানাটা বেরিয়ে আসবে
কিশোরটি বলে, আমার যে খিদে পেয়েছে বুড়ো
আর একটু চেপে থাকো বাবা, কাছেপিঠেই এসে গেছি অঙ্কটা মিললেই হয়ে গেল
পিছনের বাচ্চাটা বলে উঠল, তুমি যে বলেছিলে বাবার কাছে নিয়ে যাবে !
হ্যাঁগো দাদুভাই, বাবাও এখানেই আছেন এইসব ধাঁধাঁধন্ধ কেটে গেলেই বাপের কোল একটু রোখো বাবাসকল, অঙ্কটা মিললেই হয়
বালকটি বলে ওঠে, আর অঙ্ক না মিললে ?
না মিলে কি উপায় আছে শালার ? সহজে ছাড়ব ভেবেছ ? সেই কবে থেকে কষে আসছি, কষতে কষতে বুড়ো হয়ে গেলুম, না মিললে চলবে কেন ?

যুবকটি চড়া গলায় বলে, অনেকক্ষণ ধরে তুমি ধাপ্পা দিয়ে যাচ্ছ বুড়ো, তোমার সব ফক্বিকারি তোমার চালাকি আমি বুঝে গেছি নৌকো ঝাঁকিয়ে এবার তোমাকে ফেলে দেব
বুড়ো ঘ্যাঁস,ঘ্যাঁস করে মাথা চুলকায় ছেলেগুলোর দিকে চোরা চোখে চায়, তারপর বলে, অঙ্কটার মধ্যে কিছু ফক্কিকারি ভয় আছে বটে, কিন্তু মিলে যাওয়ারই কথা
বাচ্চাটা চেঁচিয়ে বলল, আমি বাড়ি যাব
যাবে বইকী বাবা, যাবে বইকীএখানেই কাছেপিঠেই তোমাদের বাড়িঘর শুধু অঙ্কটা মিলে গেলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে বাড়ির ঘাটের ভিড়ে যাবে নৌকো
এসব তোমার চালাকি বুড়ো

বুড়ো আর্তনাদ করে ওঠে, না না, মাইরি বলছি আমি ঘাটের গন্ধ পাচ্ছি
যুবকটি হিংস্র গলায় বলে, ছাই পাচ্ছ তোমার সব মিথ্যে কথা
বুড়ো ভারী জড়সড় হয়ে বলে, না গো বাবাসকল, এই শেষের পথটুকুই যা গোলমেলে আর দু-চার লাইনের মধ্যে অঙ্কটা মিলে যাবে মনে হয় মেরে এনেছি প্রায় আর অঙ্ক মিললেই কেল্লাফতে
অঙ্কফঙ্ক আমরা বুঝি না আমরা বাড়ি যেতে চাই
বুড়ো ভয়ে ভয়ে বলে, সে তো আমিও যেতে চাই বাবা সকল একটু চেপে বসে থাকো, আর দেরি নেই
কতকাল ধরে তুমি একই কথা বলে যাচ্ছ বুড়ো ! আর নয়, এবার তোমাকে নৌকো থেকেই ফেলে দেব
বুড়ো ফঁত করে নাকটা ঝেড়ে নিয়ে আতঙ্কিত গলায় বলে, তাহলে যে বড্ড পাপ হবে বাবা আত্মহত্যা যে পাপ
আত্মহত্যা ?
না আমাকে মারলে যে তুমি তোমাকেই মারবে
তার মানে ?
ভাল করে ঠাহর করে দেখ দিখি বাবা, আমার মুখখানা চেনা লাগছে না ?
না তো !
ওই যে একটা বড় তারা আসছে কাছে, তার আলোয় ভাল করে দেখ চেনা লাগে ?
যুবকটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, তাই তো ! তুমিই তো বুড়ো বয়সের আমি

বুড়ো শতখান হয়ে হেসে বলে, তাই তো বলছি বাবা, এক নৌকায় এই আমরা কজনা কি আলাদা ? ওই আঁতুড় থেকে এই সেকেলে বয়স অবধি একটাই যে লোক আলাদা আলাদা মনে হয় বটে, আসলে একটাই লোক যে,আবার একটা লোক হয়েও আলাদা বটে
তার মানে কী ?
ওইটেই তো ধাঁধাঁ আর ওই ধাঁধাঁর জন্যইতো শালার অঙ্কটা মিলে গিয়েও মিলতে চায় না কেবলই ফ্যাকড়া বেরোয় একটু চুপ করে বসো তো বাবারা আর একবার মাথা ঠাণ্ডা করে অঙ্কটা শুরু থেকে কষে দেখি কোথায় যে শালা ভুল হচ্ছে
সবাই চুপ করে বসে রইল নৌকোটা দুলে দুলে চলতে লাগল কত যুগ কেটে যেতে লাগল কত আলোকবর্ষ পার হল তারা তবু পৌঁছল না শুধু কাগজের উপর পেন্সিলের শব্দ হয়ে যাচ্ছে খস্ খস্ খস্ খস্

<চক্র:: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় :: ৪১৬ পৃষ্ঠা :: আনন্দ পাবলিশার্স, প্রথম প্রকাশ: ফ্রেবুয়ারি ২০০৫>

অসাধারণ একটা বই; গল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কহীন এই রুপক অংশটুকু বই এর শেষ দুটো পৃষ্ঠা থেকে তুলে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা । (কপিরাইটের কথা চিন্তা না করে!)

আমরা সবাই একটা চক্রে পড়ে আছি, শুধু চেষ্টা চক্রটা কাটিয়ে বের হয়ে আসার; ব্যাপারটা বোধহয় আত্মঘাতী, নয় কি?


বুধবার, আগস্ট ১০, ২০০৫

এলেবেলে

বাইরে ভীষণ বৃষ্টি হচ্ছে;
কখন বৃষ্টি আসে-যায়, ঠিক-ঠিকানা নাই বাইরে বের হলে কখনো কখনো এক পলকের বৃষ্টিতে ভিজেও যাই , কেয়ার করি না কিছুটা ঢিলেঢালা সময় যাচ্ছে ঘুমানো, টিভিতে খেলা দেখা আর আড্ডা মারা - অলস মানুষ হয়ে যাচ্ছি ; প্যারাডক্স এ ভরা জীবন যাপন করা একজন অলস মানুষ !

অবশ্য কয়েকবার পড়া বই আবার পড়ছি, এই মুহূর্তে পড়ছি লোটাকম্বল - সঞ্জীব চট্ট্যোপাধ্যায় এর এককথায় অসাধারণ বই আমি ভীষণ মিস করি সবসময় ; বুয়েটে ক্লাস শুরুর আগে কোচিং-ট্যুইশনি করিয়ে যে টাকা পেতাম ; গল্পের বই কিনেই শেষ করে ফেলতাম

এবার বুয়েটের সাথে সম্পর্ক শেষ করে ফেলার ইচ্ছা আছে :: ভর্তি ক্যানসেল করবো ; এইচ-এস-সি র মার্কশিটটাও তোলা হয়নি; যদিও কোন কাজে লাগবে কিনা কে জানে ?

বৃষ্টি হলে আমাদের বাসার ফোন কথাবার্তা বন্ধ করে দেয় ; এবং ফলাফল হিসেবে আপাততঃ নেট বিচ্ছিন্ন, অবশ্য নেট খুব একটা প্রয়োজনও দেখছি না ; যে কোন ধরনের যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন কোথাও চলে যেতে ইচ্ছে করে মাঝে-মধ্যে, ভীতু মানুষের মতো !

<০২:১০,আগস্ট ১০, রাজশাহী>

সোমবার, আগস্ট ০৮, ২০০৫

দেশে ~

দেশে এসে পড়লাম;

চতুর্থ সিমেস্টারে একটা কোর্স নিতাম, সমাজ, অর্থনীতি টাইপের ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে; এরকম একটা থিওরি ছিল যে, কোন ঘটনার বাইরে দাঁড়িয়ে সেটার সমালোচনা কিংবা মূল্যায়ন করা যায় খুব সহজেই :: কিন্তু ঘটনার মধ্যে থেকে ব্যাপারটা প্রায় অসম্ভব

বাইরে থেকে দেশ নিয়ে, সমাজ নিয়ে কমেন্ট করাটা সহজ ; ঘটনার ভিতরে থেকে উপলব্ধ সত্যিগুলো যখন কষ্টকর মনে হয় তখন সেগুলো নিয়ে কমেন্ট করাটা নিজের বেঁচে থাকা প্রতিবেশ নিয়ে হেসে ওঠার মত ব্যাপার বলে মনে হতে পারে

যন্ত্রের মত সবাই বলে ভাল আছি, কেমন যেন জোর করে বলা কথাটা কানে বাজে :: সত্যিকার ভাল থেকে ভাল আছি বললে এমনি বোঝা যায়, নয় কি ?
ভাল নেই বললে একগাদা ব্যাখ্যা বলতে হয়, সেজন্যে সবাই এড়িয়ে চলে বোধহয় বলাটা
কে জানে কোন্ টা ভাল থাকা আর কোন্ টা এড়িয়ে চলা ?
কে ই বা জানে ?

শুক্রবার, আগস্ট ০৫, ২০০৫

সাদাসিধে ভাইব্রেশন

আজকের প্রথম আলো য় মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর একটা ভয়াবহ লেখা পড়লাম ;( সাদাসিধে কথা শিরোনামে নিয়মিত লেখেন) এই লেখা পড়ে যদি কারও মস্তিষ্কে সামান্যতম ভাইব্রেশন না হয়, তবে তার মাথায় কোন জীবিত নিউরন আছে বলে আমার মনে হয় না আমাদের রাজনীতিবিদ রা কি এই কলামটা পড়বেন?

<দেশে ফেরার আগে; ৫ই আগস্ট >

বুধবার, আগস্ট ০৩, ২০০৫

দ্য হোয়াইট ব্যান্ড


সাদা ব্যান্ড :: "Global Call to Action Against Poverty" আন্দোলনে অংশগ্রহণের চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত ব্যান্ড
<সম্পর্কিত ব্লগ>

আজকে হোয়াইট ব্যান্ড এর খোঁজ পেয়ে গেলাম কুরি র কাছে; এই প্রথম একজনকে পেলাম যে এই আন্দোলন সম্পর্কে জানে এবং আমার বন্ধুদের মাঝেই ; ভাল লাগল ভীষণ

সোমবার, আগস্ট ০১, ২০০৫

বিস্ময়!


সি-হর্স:: শিনাগাওয়া অ্যাকোয়ারিয়াম, টোকিও :: আগস্ট ১, ২০০৫